কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের শীর্ষ নেতা মুহিবুল্লাহকে গুলি করে হত্যা

google news

কক্সবাজারের উখিয়া ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের শীর্ষ নেতা মুহিবুল্লাহকে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।

বুধবার রাত পৌনে ৯টার দিকে উখিয়া কুতুপালং লম্বাশিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় রোহিঙ্গাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দায়িত্বরত ১৪নং এপিবিএনের পুলিশ সুপার নাইমুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ‘রোহিঙ্গাদের শীর্ষ নেতা মুহিবুল্লাহকে গুলি করেছে দুর্বৃত্তরা।

খবর পেয়ে এপিবিএন সদস্যরা মুহিবুল্লাহকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে ক্যাম্পের ‘এমএসএফ’ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ময়নাতদন্তের জন্য মুহিবুল্লাহর মরদেহ রাত ৯ টার দিকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা ।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী রোহিঙ্গারা জানান, রাতে ক্যাম্পের ডি-৭ ব্লকের এক দোকানে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন মুহিবুল্লাহ। এক পর্যায়ে মুখে গামছা পরিহিত একদল অজ্ঞাত দুর্বৃত্ত অতর্কিত তাকে লক্ষ্য করে পর পর পাঁচটি গুলি ছোড়ে। তার শরীরে তিনটি গুলি লাগে।

স্থানীয় লোকজন এগিয়ে গেলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায় বলে জানান তারা।

এই রোহিঙ্গা নেতা মাস্টার মুহিবুল্লাহ নামে পরিচিত ছিলেন। আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি পিস ফর হিউম্যান রাইটস নামে একটি সংগঠনের চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। কয়েক বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করে আলোচনায় আসেন তিনি।

রোহিঙ্গাদের একটি সূত্র দাবি করেছে, ক্যাম্পগুলোতে মুহিবুল্লাহ বিরোধী অন্য একটি সশস্ত্র গ্রুপও সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু আন্তর্জাতিকভাবে মুহবিল্লাহর সুসম্পর্ক থাকায় আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যানরাইটস লাইমলাইটে ছিল।

এ কারণে সাধারণ রোহিঙ্গারা মুহিবুল্লাহ প্রেমি হয়ে উঠে। বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের সম্মানজনক প্রত্যাবাসন দাবি করে এসেছে মুহিবুল্লাহ। এ কারণে মিয়ানমার সরকারেরও কালো তালিকায় ছিলেন তিনি।

এদিকে মুহিবুল্লাহর ঘনিষ্ঠ কয়েকজন রোহিঙ্গা নেতা গনমাধ্যমকে বলেন, বেশ কিছু দিন ধরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সক্রিয় একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী মুহিবুল্লাকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিল। বিষয়টি মুহিবুল্লাহ তাঁর ঘনিষ্ঠজনদের জানিয়েছিলেন।

রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনবিরোধী একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী মুহিবুল্লাহকে হত্যা করেছে বলে ধারণা করছেন তাঁরা।

উল্লেখ্য, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দমনপীড়নের মুখে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর দেশটির রাখাইন রাজ্য থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় আট লাখ রোহিঙ্গা। সেই সময় বাস্তুচ্যুত অন্য রোহিঙ্গাদের সঙ্গে এ দেশে এসেছিলেন মুহিবুল্লাহ।

মতামত দিন