কাল থেকে চলবে না অনিবন্ধিত সব মোবাইল ফোন

google news

আগামীকাল শুক্রবার (১ অক্টোবর) থেকে অনিবন্ধিত মোবাইল ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।

এসএমএসে জানানো হবে, ‘সেটটি অবৈধ, কিছুক্ষণের মধ্যে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে’।  বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে।

বিটিআরসি জানায়, জাতীয় পরিচিতি ও নিবন্ধিত সিম কার্ডের সঙ্গে ট্যাগিং করে প্রতিটি মোবাইল ফোন নিবন্ধনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

বিভিন্ন সরকারি সেবা গ্রহণ/প্রদান নিশ্চিত করা, অবৈধভাবে উৎপাদিত/আমদানিকৃত মোবাইল ফোনের ব্যবহার বন্ধের মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব আহরণ নিশ্চিত করতে চায়।

এছাড়াও ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের চুরি ও অবৈধ ব্যবহার রোধ করা এবং জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহকে সহায়তা প্রদানের উদ্দেশ্যে ১ জুলাই থেকে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) এর কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

এরই আওতায় ১ অক্টোবর থেকে নেটওয়ার্কে নতুনভাবে সংযুক্ত সব অবৈধ হ্যান্ডসেটের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে।

বিজ্ঞাপ্তিতে, মোবাইল হ্যান্ডসেট কেনার আগে মেসেজ অপশন থেকে KYD ও ১৫ ডিজিটের IMEI নম্বর লিখে (উদাহরণ স্বরুপ KYD 123456789012345) ১৬০০২ নম্বরে প্রেরণের মাধ্যমে হ্যান্ডসেটের বৈধতা যাচাই করে কেনার অনুরোধ জানিয়েছে বিটিআরসি।

এছাড়াও বৈধভাবে বিদেশ থেকে ব্যক্তিগতভাবে আনা অথবা ক্রয়কৃত অথবা উপহারপ্রাপ্ত অনুমোদিতসংখক মোবাইল হ্যান্ডসেট ব্যবহারের আগে www.neir.btrc.gov.bd ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নিবন্ধন সম্পন্ন করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানায় কমিশন।

বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত রায় মৈত্র বলেন, আগামীকাল শুক্রবার (১ অক্টোবর) থেকে অনিবন্ধিত মোবাইলের গ্রাহককে এসএমএস পাঠিয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই হ্যান্ডসেট বন্ধ করে দেওয়া হবে। এসএমএসে গ্রাহককে জানানো হবে, ‘হ্যান্ডসেটটি অবৈধ, কিছুক্ষণের মধ্যে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে’।

তিনি আরও বলেন, আজই ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) সিস্টেমের ৩ মাসের পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শেষ হচ্ছে। ১ অক্টোবর থেকে অনিবন্ধিত বা অবৈধ ফোনগুলো বন্ধের প্রক্রিয়া শুরু হবে।

১ অক্টোবর থেকে যা হবে

বিটিআরসির কমিশনার (তরঙ্গ ব্যবস্থাপনা) এ কে এম শহীদুজ্জামান বলেন, ১ অক্টোবর থেকে কোনও গ্রাহক ফোন চালু করতে গেলে একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাবেন। ফোনটি বৈধ হলে কয়েকটি ধাপ অগ্রসর হলেই সেটি চালু হয়ে যাবে।

যদি ফোনটি অবৈধ হয় তাহলে নেটওয়ার্কে চালু করার সময় মেসেজ আসবে।

মেসেজের মাধ্যমে ক্রেতাকে জানানো হবে যে ‘তার ফোন সেটটি বৈধ নয়। কিছুক্ষণের মধ্যে ফোনটি বন্ধ হয়ে যাবে।’ এই মেসেজ ফোন বিক্রেতাকে দেখিয়ে ক্রেতা তার ফোন সেটটি বদলে নিতে পারবেন বা টাকা ফেরত নিতে পারবেন।

কোনও বিক্রেতা ফোন বদলে না দিলে বা টাকা ফেরত না দিলে ক্রেতার স্বার্থে প্রয়োজনে আমরা আইনগত ব্যবস্থাও নেবো। বিক্রেতাও বুঝবেন এভাবে এসব ফোন আর বিক্রি করা যাবে না।

আমরা চাই ক্রেতা, বিক্রেতা, উৎপাদক সবার স্বার্থটি দেখতে।

বিটিআরসির তরঙ্গ ব্যবস্থাপনা বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শহিদুল আলম বলেন, ১ অক্টোবর থেকে বৈধ মোবাইল ফোন পদ্ধতি মেনে নিবন্ধনের মাধ্যমে চালু করা যাবে।

এ সময়ের পরে যেসব নন-চ্যানেল বা অন-অফিসিয়াল (অবৈধ) ফোন নেটওয়ার্কে যুক্ত হলে তা বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। তিনি বলেন, আমরা গ্রাহকদের বলছি ফোন কেনার সময় সিম লাগিয়ে চালু করে (নিবন্ধন করে) নিতে।

সেটা সম্ভব না হলে কেওয়াইডি দিয়ে পরীক্ষা করে দেখতে যে ফোনটি বৈধ না অবৈধ।

তিনি জানান, এনইআইআর চালুর প্রথম তিন মাস (১ জুলাই থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর) ছিল পরীক্ষামূলক সময়। এই সময়ে যেসব অবৈধ মোবাইল ফোন নেটওয়ার্কে সংযুক্ত (চালু) হয়েছে সেসব আপাতত চালুই থাকবে।

এ বিষয়ে নতুন কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। পরবর্তী সময়ে সিদ্ধান্ত হলে গ্রাহকদের জানিয়ে দেবে বিটিআরসি।

উল্লেখ্য, দেশে প্রথমবারের মতো এ ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করছে বিটিআরসি। এতে মোবাইল গ্রাহকদের আতঙ্কিত না হওয়ার জন্যও বলেছে প্রতিষ্ঠানটি।

মতামত দিন