কক্সবাজার শরণার্থী শিবিরে রোহিঙ্গাদের সবচেয়ে বড় বেসরকারি স্কুলটি বন্ধ করে দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। এর ফলে হাজার হাজার রোহিঙ্গা শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন হুমকির মুখে পড়বে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
২০১৭ সালে সামরিক অভিযানের পর থেকে বাংলাদেশ প্রতিবেশী মিয়ানমার থেকে আসা প্রায় সাড়ে আট লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে। ওই সামরিক অভিযানকে সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র “গণহত্যা” হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।
গত ডিসেম্বর থেকে সরকার রোহিঙ্গাদের প্রতিষ্ঠিত স্কুলগুলো বন্ধ করতে শুরু করে এবং গত সপ্তাহের শেষের দিকে কেয়াফুরি স্কুলটি বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে এএফপি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা এএফপিকে বলেন, “যথাযথ অনুমতি ছাড়া কেউ স্কুল খুলতে ও পরিচালনা করতে পারে না। এটা অগ্রহণযোগ্য।”
কেয়াফুরি স্কুলটি রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লা চালু করেছিলেন, যাকে গতবছর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিজ অফিসে গুলি করে করা হত্যা করা হয়।
জানা গেছে, দেশে ফিরে যাওয়ার আশায় সচ্ছল রোহিঙ্গা পরিবার এবং শিক্ষকদের অর্থায়নে প্রতিষ্ঠিত স্কুলটিতে মিয়ানমারের পাঠ্যক্রম অনুসরণ করে পড়ানো হতো। স্কুলটিতে মাধ্যমিক স্তরের প্রায় ৬০০ শিক্ষার্থী ছিল।
‘ডাক্তার হতে চেয়েছিলাম’
মোহাম্মদ মোশাররফ নামের ১৯ বছর বয়সী এক শিক্ষার্থী জানান, তাদের চূড়ান্ত পরীক্ষার মাঝামাঝি সময়ে স্কুলটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
তিনি এএফপিকে বলেন, “আমি একজন ডাক্তার হতে চেয়েছিলাম।”
ইউনিসেফ ক্যাম্পগুলোতে ৪ থেকে ১৪ বছর বয়সীদের জন্য স্কুল পরিচালনা করে। এর চেয়ে বেশি বয়সী শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পে প্রতিষ্ঠিত প্রাইভেট স্কুল বা মাদ্রাসায় শিক্ষাগ্রহণ করে।
এ বিষয়ে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সাবেক মহাসচিব নুর খান লিটন বলেন, “শিক্ষা একটি মৌলিক মানবাধিকার।শিক্ষা না থাকলে নিজ দেশে ফিরে যাবার পর রোহিঙ্গারা কোনো ভালো চাকরি পাবে না।”