ডলারের ওপর নির্ভরতা কমাতে ব্যাংকগুলোকে চীনা মুদ্রা ইউয়ানে এলসি খোলার অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দেওয়া হয়।
প্রজ্ঞাপনে যা বলা হয়েছে
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে চীনা মুদ্রা ইউয়ানে এলসির জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকে লেনদেনের অ্যাকাউন্ট খোলার অনুমতি সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, অথরাইজড ডিলারদের (এডি শাখা) বাংলাদেশ ব্যাংকে চীনা মুদ্রা ক্লিয়ারিংয়ের জন্য অ্যাকাউন্ট খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, চীনা ফরেন কারেন্সিতে লেনদেন করার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে ব্যাংকগুলোর একটি ফরেন কারেন্সি অ্যাকাউন্ট মেইনটেন করতে হবে।
এজন্য একটি চলতি অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে।
প্রজ্ঞাপনের নির্দেশনা অনুযায়ী চীনা মুদ্রায় লেনদেন নিষ্পত্তির জন্য দেশের ব্যাংকগুলো বিদেশের ব্যাংকের সঙ্গে করেসপন্ডিং করতে পারবে।
জানা গেছে, দেশের মোট আমদানির ২৫ শতাংশের বেশি হয় চীনে। টাকার সঙ্গে দেশটির মুদ্রা ইউয়ানের বিনিময় হারও স্থিতিশীল।
এই মুদ্রায় আমদানি দায় নিষ্পত্তি করা গেলে বিনিময় হারজনিত লোকসান কমবে।
আবার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের সবচেয়ে বড় ভাণ্ডার ডলারের ব্যয়ও কমবে।
এসব বিবেচনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক আড়াই বছর আগে চীনা মুদ্রায় সরাসরি আমদানি-রফতানি দায় নিষ্পত্তির সুযোগ দেয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, ২০১৮ সালের আগস্টের এক নির্দেশনা অনুযায়ী ইউএস ডলার, ইউরো, জাপানি ইয়েন, যুক্তরাজ্যের পাউন্ড ও কানাডিয়ান ডলারের পাশাপাশি ইউয়ানে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য নিষ্পত্তির সুযোগ দেওয়া হয়।
তবে কিছু সীমাবদ্ধতার কারণে ব্যাংকগুলো এ সুযোগ পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারেনি।
সম্প্রতি কয়েকটি ব্যাংক চীনা মুদ্রায় ক্লিয়ারিং অ্যাকাউন্ট খুলেছে এবং লেনদেনও হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, চীন থেকে বাংলাদেশ যে পরিমাণ আমদানি করে, সে তুলনায় রফতানি খুব সামান্য। অন্যদিকে দেশের মোট রফতানি ও রেমিট্যান্স আয়ের বড় অংশ আসে ডলারে।
যে কারণে দেশের ব্যাংকগুলোর অ্যাকাউন্টে চীনা মুদ্রার জোগান থাকে খুব কম।
আবার বৈশ্বিক বাণিজ্যের জন্য যেসব ব্যাংকের ‘ক্রেডিট লাইন’ পেতে নস্ট্রো অ্যাকাউন্ট খোলা হয় সেগুলোর অধিকাংশ লেনদেন হয় ডলারে।
যে কারণে বৈশ্বিক লেনদেন নিষ্পত্তির সহজ মাধ্যম হিসেবে ডলারকেই বেছে নেন আমদানিকারকরা।