দেশে করোনা মহামারির ভয়াবহতা বাড়ায় আগামী সোমবার (২৮ জুন) থেকে ৭ দিনের জন্য জরুরি পরিষেবা ছাড়া সব সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন তথ্য অধিদপ্তরের প্রধান তথ্য অফিসার সুরথ কুমার সরকার।
তবে কঠোর লকডাউনেও বিশেষ ব্যবস্থায় গার্মেন্টস কারখানা খোলা থাকবে বলে জানিয়েছেন গার্মেন্টস মালিকদের সংগঠন-বিকেএমইএ’র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম।
তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ ব্যবস্থায় গার্মেন্টস কারখানা খোলা রাখার অনুমতি আমরা পেয়েছি।’
তিনি উল্লেখ করেন, তাকে ক্যাবিনেট সেক্রেটারি জানিয়েছেন, কঠোর লকডাউনের মধ্যেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিল্প কলকারখানা খোলা থাকবে।
মোহাম্মদ হাতেম বলেন, যানবাহন বন্ধ থাকবে এটা মেনেই কারখানা খোলা থাকবে।
তিনি আরো বলেন, যেসব শ্রমিক বা কর্মকর্তা অথবা দায়িত্বশীল কারখানার দূরে বসবাস করেন, এই কয়দিনের জন্য তারা কারখানার আশপাশে থাকবেন, অথবা কারখানার ভেতরে অবস্থান করবেন।
বিকেএমইএ’র সহ-সভাপতি বলেন, ‘করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সরকারের যেকোনও সিদ্ধান্তে আমরা সহমত পোষণ করি এবং সরকারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সহযোগিতা করবো।’
এ প্রসঙ্গে বিজিএমইএ’র সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ‘গার্মেন্টস কারখানা বন্ধ হলে শ্রমিকরা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে গ্রামে যেতে চাইবে, এ কারণে গার্মেন্টস খোলা রাখতে হবে।
ফারুক হাসান বলেন, ‘কারখানা বন্ধ রেখে যতটা না উপকার, তার চেয়ে খোলা রাখাই বেশি উপকার। বন্ধ হলে অর্ডার বাতিল হবে, বায়াররা চলে যাবে। ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করার সুযোগ কমে যাবে।’
এ পরিস্থিতিতে বিজিএমইএ’র সভাপতি বলেন, ‘গার্মেন্টসগুলোকে লকডাউনের আওতার বাইরে রাখা হলে গার্মেন্টস শ্রমিকরা তুলনামূলক নিরাপদ থাকবে। বিগত দিনে দেখা গেছে, মালিকরা করোনায় আক্রান্ত হলেও শ্রমিকরা হননি।’
উল্লেখ্য, শুক্রবার (২৫ জুন) সন্ধ্যায় তথ্য অধিদপ্তরের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা সুরথ কুমার সরকারের স্বাক্ষর করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে— সোমবার সকাল ৬টা থেকে সারাদেশে লকডাউন শুরু হবে।
এ সময় জরুরি সেবা ব্যতীত সকল সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে। জরুরি পণ্যবাহী ব্যতীত সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে।
অ্যাম্বুলেন্স ও চিকিৎসা সংক্রান্ত কাজে শুধু যানবাহন চলাচল করতে পারবে। জরুরি কারণ ছাড়া বাইরে কেউ বের হতে পারবেন না।’
গত বছর করোনা পরিস্থিতির শুরুতে লকডাউন ঘোষণা করা হলে কারখানা বন্ধ হওয়ায় গ্রামে ছুটে গিয়েছিলেন হাজার হাজার গার্মেন্টকর্মী। পরে বেতন দেওয়ার কথা শুনে ট্রাকে গাদাগাদি করে ও পায়ে হেঁটে কর্মস্থলে ফিরে আসেন সবাই।
কিন্তু ঢাকায় পৌঁছে তারা জানতে পারেন যে, কারখানা বন্ধ। ফলে ওই সময় হাজার হাজার শ্রমিক অনিশ্চয়তায় পড়েন।
আরও …
- কঠোর লকডাউন: বের হলেই লাগবে মুভমেন্ট পাস!
- কঠোর লকডাউন: পুলিশ-বিজিবি, মোতায়েন থাকবে সেনাবাহিনী
- সোমবার থেকে সারাদেশে কঠোর লকডাউন
- শাটডাউন: জরুরি পরিষেবা ছাড়া সব কিছু বন্ধের প্রস্তুতি!
- সারাদেশে সর্বাত্মকভাবে ১৪ দিনের ‘শাটডাউনের’ সুপারিশ
- ফের সারাদেশে ‘কঠোর লকডাউনের’ কথা ভাবছে স্বাস্থ্য অধিদফতর
- ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট: দেশে দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে, আগের যে কোনও বিপর্যয়কে ছাড়িয়ে যাওয়ার শঙ্কা