চট্টগ্রামে করোনা তার ভয়াবহ রূপ দেখানো শুরু করেছে। আক্রান্তের হারই আশংকাজনকহারে বাড়ছে তা নয় ; চলতি মাসের মধ্যে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু হয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায়। এদিন নগরের একজন ও উপজেলার ৬ জন মিলে মোট ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।
রোববার (২৭ জুন) চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
এ সময় নতুন করে করোনায় আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে ৩০০ জন। শনাক্তের হার ২২.০৫ শতাংশ। চলতি মাসে চট্টগ্রামে করোনা আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ও শনাক্তের রেকর্ড এটি।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, চট্টগ্রামের সাতটি ও কক্সবাজারে একটি ল্যাবে এক হাজার ৩৬০ জনের নমুনা পরীক্ষা করলে ৩০০ জনের করোনা শনাক্ত হয়।
শনাক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে চট্টগ্রাম নগরের ২০৪ জন এবং বিভিন্ন উপজেলার ৯৬ জন রয়েছেন।
উপজেলায় করোনা আক্রান্তদের মধ্যে লোহাগাড়ার চার জন, সাতকানিয়া একজন, বাঁশখালীর দুই জন, আনোয়ারার একজন, চন্দনাইশের একজন, পটিয়ার তিন জন, বোয়ালখালীর দুই জন, রাঙ্গুনিয়ার ছয় জন, রাউজানের তিন জন, ফটিকছড়িতে ১১ জন, হাটহাজারীর পাঁচ জন, সীতাকুণ্ডের ৩১ জন, মিরসরাইয়ের ২৫ জন ও সন্দ্বীপের একজন রয়েছেন।
চট্টগ্রামে এ পর্যন্ত মোট করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৫৭ হাজার ৬৭০ জন। মোট শনাক্তদের মধ্যে চট্টগ্রাম নগরীর ৪৫ হাজার ১৩০ জন, আর জেলার বিভিন্ন উপজেলার ১২ হাজার ৫৪০ জন রয়েছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে করোনায় মারা যাওয়া সাত জনের মধ্যে একজন নগরের বাসিন্দা, আর ছয় জন নগরের বাইরের বাসিন্দা। করোনা আক্রান্ত হয়ে চট্টগ্রামে এ পর্যন্ত মোট ৬৮১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৪৬৮ জন চট্টগ্রাম নগরের, আর বিভিন্ন উপজেলায় মারা গেছেন ২১৩ জন।
প্রসঙ্গত, শনিবার (২৬ জুন) চট্টগ্রামে করোনা শনাক্ত হয়েছিল ২১৬ জনের। মৃত্যু হয়েছিল তিন জনের। করোনা শনাক্তের হার ছিল ২০.৮২ শতাংশ।
শুক্রবার (২৫ জুন) চট্টগ্রামে করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন ২৭৪ জন। মৃত্যু হয়েছিল ৫ জনের। শনাক্তের হার ছিল ২৮.০৭ শতাংশ।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) চট্টগ্রামে করোনা শনাক্ত হয়েছিল ২৪৭ জনের। মৃত্যু হয়েছিল একজনের। শনাক্তের হার ছিল ২১.২৫ শতাংশ।
উল্লেখ্য, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সারাদেশে ১৪ দিনের ‘শাটডাউন’ দেওয়ার সুপারিশ করেছে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি।
এর প্রেক্ষিতে সরকার সোমবার থেকে সীমিত আকারে লকডাউন ও বৃহস্পতিবার থেকে কঠোর লকডাউনের পথে যাচ্ছে।
এতে বলা হয়, জরুরি সেবা ছাড়া যানবাহন, অফিস-আদালতসহ সবকিছু বন্ধ রাখা প্রয়োজন এ ব্যবস্থা কঠোরভাবে পালন করতে না পারলে আমাদের যত প্রস্তুতিই থাকুক না কেন স্বাস্থ্য ব্যবস্থা অপ্রতুল হয়ে পড়বে।
যদিও চট্টগ্রামে রাত ৮ টার পর কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে গত ২৩ জুন থেকে।