সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় কারান্তরীণ টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ অভিযুক্ত ১৫ আসামির অভিযোগ গঠন করেছে আদালত। এর মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে আলোচিত এই হত্যা মামলার বিচার।
কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাঈল আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নিয়ে চার্জগঠনের আদেশ দেন।
একই সময়ে ওসি প্রদীপ, এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিত ও কনস্টেবল সাগর দেবের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন। জেলা ও দায়রা জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) ফরিদুল আলম মামলাটির অভিযোগ গঠনের শুনানি করেন।
এর আগে বেলা সাড়ে ১০টায় সিনহা হত্যায় অভিযুক্তদের কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আনা হয়।
প্রিজন ভ্যান থেকে আসামিদের নামানোর সময় স্বজনদের কান্নার রুল পড়ে। কঠোর নিরাপত্তায় কাঠগড়ায় তোলা হয় ১৫ আসামিকে।
দণ্ডবিধির ৩০২, ২০১, ১০৯, ৩৪ ধারাসহ আরও কয়েকটি ধারায় অভিযোগ গঠন করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন পিপি ফরিদুল।
উল্লেখ্য, অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় ২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর ওসি প্রদীপ কুমার দাসসহ ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন তদন্ত কর্মকর্তা র্যাব-১৫-এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার খায়রুল ইসলাম।
সে বছরের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশ কর্মকর্তা লিয়াকত আলীর গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান।
শুরুতে পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, সিনহা তল্লাশিচৌকিতে বাধা দেন। আর তিনি পিস্তল বের করলে চেকপোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ তাকে গুলি করে।
তবে পুলিশের বক্তব্য নিয়ে সে সময় প্রশ্ন ওঠে। আর সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস মামলা করেন নয়জনের বিরুদ্ধে।
মামলায় প্রধান আসামি করা হয় বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক লিয়াকত আলীকে। ওসি (বরখাস্ত) প্রদীপ কুমার দাসকে করা হয় দুই নম্বর আসামি। মামলার তিন নম্বর আসামি করা হয় টেকনাফ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নন্দদুলাল রক্ষিতকে।
এরপর অভিযুক্ত সাত পুলিশ সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে তদন্তে নেমে র্যাব স্থানীয় তিনজন, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) তিন সদস্য এবং প্রদীপের দেহরক্ষীসহ মোট ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করে।