বৃটিশ রাষ্ট্রদূতকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব

google news
বৃটিশ রাষ্ট্রদূত
ঢাকাস্থ ভারপ্রাপ্ত বৃটিশ হাইকমিশনার জাভেদ প্যাটেল

সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে ‘হাউজ অ্যারেস্ট’ বা গৃহবন্দি রাখা হয়েছে মর্মে বৃটিশ ফরেন অ্যান্ড কমনওয়েলথ অফিস যে রিপোর্ট করেছে তার কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ।

এ নিয়ে ঢাকাস্থ ভারপ্রাপ্ত বৃটিশ হাইকমিশনার জাভেদ প্যাটেলকে রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এসব জানানো হয়েছে।

ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকে (এএইচসি) বলা হয়েছে, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বর্তমান পরিস্থিতির প্রসঙ্গে ‘গৃহবন্দি’ শব্দটি ব্যবহার করা চরম বিভ্রান্তিকর।

তাকে স্পষ্ট করে জানানো হয়েছে, বেগম জিয়ার ভাইয়ের আবেদনে সরকার ফৌজদারি কার্যবিধির বিধান ১৮৯৮ অনুযায়ী, তার কারাগারের সাজা স্থগিত করেছে। ২০২০ সালের মার্চ মাসে বাড়িতে চিকিৎসা এবং বিদেশ ভ্রমণ করবে না শর্তে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

এটি উল্লেখ করা হয়েছিল যে, তার সাজা স্থগিত এবং জেল থেকে মুক্তি, প্রাথমিক ছয়-মাসের জন্য প্রযোজ্য, পরে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর এবং ২০২১ সালের মার্চ মাসে দু’বার এটি বাড়ানো হয়েছিল।

বৃটিশ ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকে বলা হয়েছে, এ জাতীয় আইনি সমস্যা নিয়ে কোনও বিভ্রান্তির ক্ষেত্রে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে পরামর্শ করা বাঞ্ছনীয়।

বৃহস্পতিবার বৃটেনের পররাষ্ট্র, কমনওয়েলথ ও উন্নয়ন দপ্তরের বার্ষিক মানবাধিকার রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। ওই রিপোর্টে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির সার্বিক উন্নতি হয়নি বলে দাবি করার পাশাপাশি খালেদা জিয়ার অবস্থান নিয়ে মন্তব্য ছিল।

বৃটিশ দূতকে তলবের সঙ্গে একটি ‘প্রটেস্ট নোট’ও দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়, বৃটেনের মানবাধিকার রিপোর্টের বাংলাদেশ চ্যাপ্টারে এমন কিছু বিষয়ের অবতারণা করা হয়েছে, যা ঢাকাকে হতাশ করেছে।

খালেদা জিয়ার বর্তমান অবস্থানের বিষয়ে কোনো বিভ্রান্তি থাকলে ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

একইসঙ্গে বাংলাদেশ সরকার কিংবা সরকারি দল আওয়ামী লীগ সম্পর্কে কটাক্ষমূলক ও বিভ্রান্তিকর কোনো মন্তব্য করা থেকে বৃটেনকে বিরত থাকতে সতর্ক করা হয়।

মানবাধিকার রিপোর্টে রোহিঙ্গাদের বিষয়ে যে মন্তব্য এসেছে তাও প্রত্যাখ্যান করে ঢাকা।

তলবের জবাবে বৃটিশ দূত জানিয়েছেন, বাংলাদেশের উদ্বেগের বিষয়টি তিনি তার সরকারকে জানাবেন।

তিনি বলেন, যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের সাথে তার বৈচিত্র্যপূর্ণ অংশীদারিত্বের মূল্যবান এবং প্রতিষ্ঠিত ব্যবস্থার মাধ্যমে মানবাধিকার ও প্রশাসনিক ইস্যুতে গঠনমূলক সংলাপ চালিয়ে যাবে বলে আশা করি।

তিনি বাংলাদেশকে ‘পরিপক্ক গণতন্ত্র’ হিসাবে স্বীকৃতি দেন এবং বলেন, যুক্তরাজ্য সরকার বাংলাদেশের কোন রাজনৈতিক দলের পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান নেয়নি।

উভয়পক্ষের কর্মকর্তারা সরকারি নথি বা প্রতিবেদনে উদ্ধৃতি দেওয়ার জন্য সঠিক তথ্যের উৎস ব্যবহারের গুরুত্বের সাথে একমত হন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (পশ্চিম ইউরোপ এবং ইইউ) ব্রিটিশ হাইকমিশনের কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় করেন।

আরও পড়ুন…

মতামত দিন