জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ রিপোর্ট প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। এতে নিম্নাঞ্চল, বিশেষ করে সমুদ্রপৃষ্ঠের কাছাকাছি বসবাসকারীদের সম্পর্কে খুব বেশি সতর্কতা দেয়া হয়েছে।
বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে, অবিলম্বে পদক্ষেপ না নিলে, কার্বন নির্গমন বড় অংকে কমিয়ে না আনলে উপকূলীয় এলাকা পানিতে ডুবে যাবে। বাস্তুচ্যুত হবে কোটি কোটি মানুষ।
এর পরপরই অনলাইন স্কাইনিউজ বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে কি প্রভাব পড়বে তার একটি চিত্র ফুটিয়ে তুলেছে।
তাতে বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধিতে এরই মধ্যে বাংলাদেশের হাজার হাজার মানুষ তাদের ঘরবাড়ি থেকে উচ্ছেদ হয়েছেন।
জাতিসংঘের রিপোর্টে যেসব মানুষের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে, যারা নানা প্রতিকূলতার মুখোমুখি হচ্ছে বা হবেন, তার মধ্যে আছে এসব মানুষ। এরা এরই মধ্যে এমন বাস্তবতার মুখোমুখি।
স্কাই নিউজের সাংবাদিক লিখেছেন, ২০ বা ৩০ বছর পরে এসব মানুষ কিভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে, সেটা নিয়ে নয়।
আমাদের কাজ হলো ঠিক এই মুহূর্তে তারা কি ক্ষতির মুখোমুখি তা ডকুমেন্ট আকারে তুলে ধরা। বাংলাদেশে বর্ষা মৌসুম দীর্ঘস্থায়ী।
এ সময় মৌসুমি ঘূর্ণিঝড় হয়। জলবায়ু পরিবর্তন: স্থল ও সমুদ্রের উষ্ণায়ন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উত্থান, প্রচণ্ড তাপমাত্রা, বৃষ্টি এবং তীব্র শক্তিসম্পন্ন ঘূর্ণিঝড় দেখা দেয় এখানে।
এসব ঘটনায় এরই মধ্যে উপকূলীয় এলাকার লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। তারা শহরের দিকে ছুটছেন, যেসব শহর এমনিতেই মানুষে মানুষে গাদাগাদি।
স্কাই নিউজের সাংবাদিক লিখেছেন, বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় আমরা সাক্ষাত পেয়েছি নূরজাহান বেগমের। স্বামী, ১৬ ও ২১ বছর বয়সী দুই ছেলেকে নিয়ে তিনি অবস্থান নিয়েছেন বস্তির একটি ছোট্ট ঘরে।
সেখানে পরিস্থিতি অন্ধকারময়, নোংরা এবং বিপজ্জনক। বস্তিতে অন্যদের মতোই নূরজাহানের ঘরে কোনো জানালা নেই।
ঘরে স্থানীয় সময় সকাল ১১টায় যখন সাংবাদিকদের এই সাক্ষাৎ ঘটে ।
ঘরের ভিতরের তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে। ঘরের দরজার সামনেই চুলা। তাতে কাঠ দিয়ে রান্না করা হয়।
উন্মুক্ত ড্রেনের ময়লার দুর্গন্ধের সঙ্গে এর ধোয়া মিশে যায়। বৃষ্টি হলেই এসব ড্রেনের ময়লা ভেসে ওঠে। এই পানিতে সয়লাব হয় ঘর।
নূরজাহান বলেছেন, এই ঘরে থাকতে তার গা ঘিনঘিন করে। কিন্তু এখান থেকে সরে যাওয়ার সামর্থ নেই তার।
উপকূলের এক গ্রামে তার বাড়ি। গত বছর ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের পর বন্যায় তা ভেসে যায়। নূরজাহান বলেন, আমার পরিবার সবসময়ই ওই বাড়িতে বসবাস করতো। সেখানে বন্যা হতো।
প্রতিবছর বর্ষামৌসুমে বৃষ্টিপাত হতো। কিন্তু গত বছর তা অতিমাত্রায় হয়েছে। আমরা তরমুজ, মরিচসহ বিভিন্ন ফলের চাষ করতাম। কিন্তু বন্যা আমাদের সব ভাসিয়ে নিয়েছে।
আরও ……