বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ চত্বরে ১৯ আগস্ট রাতের ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুনিবুর রহমান শোভনের বিরুদ্ধে এবার দুটি পৃথক মামলা করেছেন সিটি করপোরেশনের একজন কাউন্সিলর এবং একজন কর্মকর্তা। একটি মামলায় সদর থানার ওসিকেও অভিযুক্তের তালিকায় রাখা হয়েছে।
মামলায় তাদের বিরুদ্ধে ‘সিটি করপোরেশনের নিয়মিত কাজে বাধাদান ও হামলার’ অভিযোগ আনা হয়েছে জানিয়ে রোববার (২২ আগস্ট) বিকেলে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুস বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আজ রবিবার (২২ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম খোকন এবং সিটি করপোরেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. বাবুল হাওলাদার ইউএনও, আনসার সদস্য ও কোতোয়ালি থানার ওসিসহ অজ্ঞাতনামা শতাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে আদালতে পৃথক দুটি নালিশি আবেদন করেন।
জেলা জজ আদালতে দায়ের করা এই মামলা দুটি উপজেলা প্রশাসনের সাথে নগর ভবনের সাম্প্রতিক মুখোমুখি অবস্থানকে নতুন মাত্রা দিল।
এর আগে সরকারি বাসভবনে হামলার ঘটনায় ইউএনও মি. রহমান নিজে বাদী হয়ে একটি মামলা করেছিলেন। মামলায় বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহকে হুকুমের আসামি করা হয়।
ওই মামলায় ৩০-৪০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত কয়েকশ জনকে আসামি করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বুধবার দিবাগত রাতে বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুনিবুর রহমানের সরকারি বাসভবনে কয়েক দফা হামলা চালানো হয়। এ ঘটনায় পুলিশ ও আনসার সদস্যসহ অন্তত ৩০-৪০ জন আহত হন।
পরে এ নিয়ে মামলা হয় এবং পুলিশ একজন কাউন্সিলরসহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে যারা মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর অনুসারী বলে পরিচিত।
গ্রেপ্তারকৃত সবার জামিন আবেদনই রবিবার নাকচ করে দিয়েছে আদালত।
ইউএনও’র বিরুদ্ধে মামলার আবেদনে যা বলা হয়েছে:
যে দুটি মামলা করা হয়েছে তার একটি মামলার বাদী সিটি করপোরেশন একজন কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম খোকন।
তার আইনজীবী কাইয়ুম খান কায়সার জানান, অভিযোগে তারা বলেছেন, “বুধবার রাতে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা অব্যবহৃত ব্যানার, পোস্টার পরিষ্কার করতে ইউএনও’র বাসায় গেলে তাদেরকে বাধা দেয়া হয়।
এরপর ঘটনাস্থল পর্যবেক্ষণ করতে প্যানেল মেয়র সেখানে যান এবং বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে ইউএনও’র নির্দেশে সেখানে উপস্থিত আনসাররা প্যানেল মেয়র এবং তার কর্মীদের লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে।”
অন্যদিকে সিটি কর্পোরেশনের একজন কর্মকর্তাও সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা অভিযানে বাধাদান ও হামলার অভিযোগ এনে মামলা করেছেন, যেখানে তিনি ইউএনও ও কোতয়ালি থানার ওসি নুরুল ইসলাম সহ ৪০-৫০ জনকে অভিযুক্ত করেছেন।
“অভিযোগ সেখানেও একই ধরণের। সিটি কর্পোরেশনের কর্মীরা তাদের দায়্ত্বি পালনে যাওয়ার পর তাদের বাধা দেয়া হয় এবং এক পর্যায়ে ইউএনওর নির্দেশে তাদের মারধর ও গুলি করা হয়”, বলেন কাওসার।
বরিশালে ইউএনও -ওসির বিরুদ্ধে মামলা তদন্ত করবে পিবিআই
বরিশাল সদর ইউএনও মুনিবুর রহমান ও ওসি নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে দুটি মামলার আবেদন গ্রহন করেছে আদালত।
একই সঙ্গে মামলা দুটি পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছের বিচারক।
আজ বিকাল সাড়ে চারটায় চিফ জুডিশিয়াল আদালতের বিচারক মাসুম বিল্লাহ। এ তথ্য জানিয়েছেন এ্যাড. তালুকদার মোঃ ইউনুচ।
আরও পড়ুন …